0
(মূল লেখক: তারেক-অনু, সচালায়তন ব্লগ)

স্কুল জীবনের ষষ্ঠ বা সপ্তম শ্রেণীতে ভূ-গোল নামের এক বিষয় জীবনে যুক্ত হল, ভূ মানে পৃথিবী আর গোল মানে তো রাউন্ড মানে গোল! গোল পৃথিবীর সমস্ত বিষয়-আসয় নিয়ে জানার চেষ্টা চলতে থাকল তখন থেকেই- সমভূমি কাকে বলে, মালভূমি কি, বিশ্বে কত ধরনের পর্বত আছে, ভূমিকম্প কেন হয়, মহাদেশগুলো তৈরি হল কি করে এমন অনেক কিছুর সাথে আগ্নেয়গিরি! যে পাহাড় থেকে মাঝেই মাঝেই আগুনের রূপ নিয়ে গরম পাথর বাহির হয়, তাদের নাম আবার লাভা। জানলাম বিশ্বে তিন ধরনের আগ্নেয়গিরি আছে – মৃত, সুপ্ত এবং সক্রিয়। নাম থেকেই বোঝা যাচ্ছে একটার সমস্ত লাভার ভাণ্ডার শেষ হয়ে গেছে, অন্যটার শেষের পথে, কিন্তু হঠাৎ হঠাৎ লাভা বমি করে জানান দেয় যে- বেঁচে আছি, আর সক্রিয় আগ্নেয়গিরির কাজকর্মে তার ধারে কাছে ভিড়তে পারবেনা না।

সেই সাথে মুখস্থ করা হল কিছু আগ্নেয়গিরির নাম বিশেষ করে মনে আছে জাপানের ফুজিয়ামা এবং ইতালি ভিসুভিয়াস। সেই প্রথম পরিচয় ভিসুভিয়াস নামটির সাথে, এর কয়েক মাস পরেই পড়া হল সেবা প্রকাশনীর বদৌলতে লর্ড লিটনের লেখা লাস্ট ডেইজ অফ পম্পেই, ভূমধ্যসাগর তীরের পম্পেই নামের সেই সমৃদ্ধ নগরীর জীবনযাত্রার বর্ণনা খোদাই করা ছিল সেখানে ভিসুভিয়াসের লাভাস্রোতের মূর্তিমান অভিশাপ হয়ে নেমে আসার আগ পর্যন্ত। কি ভয়ংকর হতে পারে কোন আগ্নেয়গিরি পাদদেশে বাস করা, বিশেষ করে যদি তার জ্বালামুখ থেকে নিয়মিত বিরতিতে ধোঁয়া বেরোতে থাকে! নানা পত্রপত্রিকা পড়ে পরের বছরগুলোতে জানলাম ২০০০ বছর আগেই ভিসুভিয়াসের অগ্ন্যুৎপাতের ফলে ধ্বংস হয়ে গেছিল পম্পেই সহ পাঁচটি শহর। তারপরও কয়েকবার ক্ষেপে উঠলেও তেমন প্রলয়ঙ্করী রূপ দেখা যায় নি এখন পর্যন্ত, নতুন ভাবে গড়ে উঠেছে পম্পেই, এরকুলান্যো শহর, সেই সাথে আছে কাছের মহানগরী নেপলস।
155280_10152185909480497_1963379244_n
বারকয়েকই চিন্তা করেছি আগ্নেয়গিরি চড়ার, বিশ্বের উচ্চতম মৃত আগ্নেয়গিরি কিলিমাঞ্জারো চড়বার পরিকল্পনা প্রতি সামারেই হতে থাকে, কিন্তু পেছাচ্ছে নিয়মিত, টোকিও গেলেই ফুজিয়ামা চড়ার সমস্ত বন্দোবস্ত পাকা হয়ে আছে, কিন্তু টোকিও যাওয়াও হচ্ছে না, ফলে দাঁড়ানো হচ্ছে না ফুজিয়ামার তুষারাবৃতশৃঙ্গেও। এদিকে আমাদের সৌরজগতের সর্বোচ্চ পর্বতটাও কিন্তু একটা আগ্নেয়গিরিই, মঙ্গল গ্রহের অলিম্পস মন্স মাউন্ট এভারেস্টের তিনগুন উঁচু, আমাদের গ্রহে হলে অক্সিজেনে ছাড়া সেখানে আরোহণের সামর্থ্য কারোই হত না, কিন্তু মঙ্গলে যাবার উপায় আপাতত পাওয়া যাচ্ছে না বলেই এই মাসের ২য় সপ্তাহে ভিসুভিয়াসের পাদদেশের নেপলস শহর ভ্রমণে সময় মনে হল দিগন্ত জুড়ে দাড়িয়ে থাকা ভয়াল ভয়ংকর সুন্দর সুপ্ত আগ্নেয়গিরিটাতে আরোহণের চেষ্টা করলে কেমন হয়? কেমন লাগবে সেই জ্বালামুখের কিনারে দাড়িয়ে কন্দরের টগবগে লাভা দেখতে? নিজেকে কি জুল ভার্ণের জার্নি টু দ্য সেন্টার অফ দ্য আর্থ বইয়ের চরিত্রের মতই মনে হবে? বলি করে করে, সেখানে না যাওয়া পর্যন্ত!
408747_10152188279085497_1712039939_n
চলুন তাহলে, ঘুরে আসি ভিসুভিয়াসের জ্বালামুখ থেকে, আর যাবার আগে কয়দিন হাঁটাচলা করে ফিটনেস বাড়িয়ে নিন, সকালে সেদ্ধ ডিমের সাথে শসা খেয়ে একা একা ঘরে থেকে গন্ধকের গন্ধে খাপ খাওয়ানোর চেষ্টা করুন ( খবরদার, সাথে কাউকে নিবেন না, নিলেও সাথীর অকথ্য গালাগালির জন্য তারেক অণুকে দায়ী করা চলবে না, হুম), মাঝে মাঝে ওয়াকিং স্টিক নিয়েও পায়চারি করতে পারেন। প্রস্তত? চলুন তাহলে –
৯ অক্টোবর সকালেই নেপলস থেকে ট্রেন যাত্রা শুরু হল প্রাচীন শহর এরক্যোলানোর উদ্দেশ্যে, সেখানে রেলষ্টেশন থেকেই ভিসুভিয়াসের দোরগোঁড়ায় যাবার বাহন পাবার কথা। কিউবার প্ল্যায়া হিরণের কাছে ক্যারিবীয় সাগরতলের অপূর্ব রঙিন অভিজ্ঞতার কথা খেয়াল আছে হয়ত আপনাদের এই পোস্টের কল্যাণে, সেইবারের মতই অতল সাগরের তলদেশ থেকে পাহাড় চূড়া ছোবার অভিযানে সাথী হয়েছে ফিনল্যান্ডের তরুণী সারা এসকেলিনেন।
vintique_image
সেই সাথে ষ্টেশনে জোটা কয়েকজনের সাথে চেপে মাইক্রোবাস ধরনের বাহনে চেপে যাত্রা শুরু হল ভিসুভিয়াস ন্যাশনাল পার্কের উদ্দেশ্যে। শহর ছাড়ার পর থেকেই সাদা মেঘের ভেলাদের নোঙর ফেলার বন্দর ভিসুভিয়াসের চূড়া দেখা গেল, বছরের এই সময়টা নাকি মেঘময়ই থাকে, তবে আজ অবস্থা কিছুটা ভাল। সূর্যের উপস্থিতি বোঝা যাচ্ছে থেকে থেকেই, এখন আশা যেন শিখরে পৌঁছানোর পরে মেঘের ভেলাদের অনুভব না করতে হয়!
536516_10152185909735497_666567382_n
১২৮১ মিটার ( ৪,২০৩ ফুট) উচ্চতার আগ্নেয়গিরিকে ঘিরেই গড়ে উঠেছে ১৩৫ বর্গ কিলোমিটারের ভিসুভিয়াস ন্যাশনাল পার্ক, দূর থেকেই বোঝা যায় চূড়ার কাছে যেমন যেন চকচকে লালচে পাথরের ঢাল কিন্তু খানিক নিচ থেকেই ঘন সবুজের জঙ্গল। সেই বন চিরেই ঘুরে ঘুরে উপরের দিকে চলে গেছে পীচ ঢালা রাস্তা,
269445_10152212550685497_1522787780_n
লালচে মাটি, কেমন যেন সুড়কি মেশানো মনে হল, কয়েক জায়গায় কালো পাথরের বিশাল বিশাল স্তূপ, হাজার বছর আগের লেলিহান লাভা এখান পর্যন্ত এসেই জীবনীশক্তি হারিয়ে পরিণত হয়েছে পাষাণী অহল্যায়।
1110_10152180588425497_213262166_n
কিন্তু তার উপরেই এখন সবুজের সমারোহ, বিশাল বিশাল গাছ গজিয়ে ছেয়ে ফেলেছে সেই বিভীষিকাময় স্মৃতিকে। এই বনে যে হরিণের দর্শনও মিলতে পারে তা জানা গেল পথের পাশের সাইনবোর্ডে।
60370_10152212550620497_993312644_n
এক জায়গায় গাড়ী থামিয়ে গাইড দেখাল সবুজ বন দলে চলে যাওয়া পাথর নদীকে, ভিসুভিয়াসের শেষ লাভা উদগীরন ঘটেছিল ১৯৪৪ সালে, তখন নাকি এই পর্যন্ত এসেই তার সমস্ত তর্জন-গর্জন উবে গিয়েছিল, ধিকিধিকি আগুন জ্বলা তপ্ত লাভা পরিণত হয়েছিল কঠিন শিলাতে, নিশ্চিন্ত হয়েছিল অগণিত মানবজীবন। এখনও সবসময় ব্যপক নজরদারী করা হয় ভিসুভিয়াসের উপরে, বলা তো যায় না- পাগলী যদি খেপে যায় ২০০০ বছর আগের মত? অবশ্য খেপলে তার সেই ক্রোধ থেকে কি করে রক্ষা পাওয়া যাবে সে নিয়ে অবশ্য সবাই সন্দিহান।
986_10152180588765497_421238703_n
পথের বাঁকে পাহাড় আর বনের ফাঁকে দূরের নেপলস শহর দেখা গেল, সাথে সুনীল ভূমধ্যসাগর, এমনিই কি আর নেপলসের রূপ নিয়ে বলা হয়- নেপলস দেখার আগে মারা যেও না!
374047_10152176163880497_446514060_n
গাড়ী নিয়ে গেল ঢালের গায়েই কিছুটা ছড়ানো মত জায়গায় সেখানেই গাইড তার যান সহ অপেক্ষা করবেন দেড় ঘণ্টা, এর মাঝেই আমাদের জ্বালামুখ ছুয়ে ফিরে আসতে হবে। সেই পার্কিং প্লেসের পাশেই টিকেটঘর, ৭ না ৮ ইউরোর জানি টিকেট ( কদিন আগে এক তথ্যচিত্রে দেখলাম আফ্রিকার এক দেশে, সম্ভবত কঙ্গোতে, জীবন্ত আগ্নেয়গিরি দেখতে টিকেটের দাম করা হয়েছে ২৫০ ডলার, নিরাপদ দূরত্বে দাড়িয়ে লাভার স্রোত বেরোতে মানে নতুন ভূমির জন্ম হতে দেখা যাবে), সেটার পরপরই মূলফটক পেরিয়ে লালমাটির রাস্তা চলে গেছে ঢাল বেয়ে উপরের দিকে, প্রথমেই দেখি লাঠি ভাড়া করার সুব্যবস্থা আছে! কেনাও যেতে পারে!
36553_10152212550565497_492648941_n
অবশ্য লাঠিয়ালরা তাদের দিকে ভ্রুক্ষেপও না করাকে মোটেও সুনজরে দেখল না, ভাব খানা এমন- যাওনা এমন গটগটিয়ে, দেখব কতক্ষণ পার এক দমে! কিন্তু ওদের কি করে বোঝায় যে মামুর বুটারা- এই ১২০০ মিটারের পাহাড়ের ঢাল বেয়ে উঠতে যদি লাঠি ব্যবহার করি, তাহলে তো কেউ পাসতেই পারবেহেনা( চিনতেই পারবে না),আর নিজের কাছেই কেমন কেমন লাগবে- তারচেয়ে যতক্ষণ শ্বাস, ততক্ষণ আশ- পদব্রজই ভরসা ভবঘুরের।
223255_10152185911000497_1476254727_n
বেশ ছড়ানো পথ, রেলিং দেয়া আছে, এঁকে বেঁকে উঠে গেছে শিখর পর্যন্ত। ঢালের দিকে নজর গেলেই লাল মাটি, লাল পাথর, লাল কাঁকরের রাজত্ব, কিন্তু সবকিছু ছাড়িয়েই চোখে আরাম বুলিয়ে যাচ্ছে কঠিন পাথর ভেদ করে ফোটা ফুলের গুচ্ছ, বা গাছের দল। আসলেই, খানিকটা সময় পেলেই প্রকৃতি কি চমৎকার ভাবেই না প্রায় সমস্ত আঘাতই সামলে নেয়।
486954_10152185910850497_1757545782_n
29343_10152212550500497_890544026_n
দূরের নেপলস যেন লুকোচুরি খেলতে লাগল সাদা মেঘের ফাঁকে ফাঁকে, এদিকে আমাদের ছোঁয়ার প্রতিযোগিতা লাগিয়েছে যেন কালো কালো মেঘের দলেরা, কিন্তু সুখের কথা- এখন পর্যন্ত তাদের বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ার লক্ষণ দেখা দিচ্ছে না, দিলেই কেলেঙ্কারির একশেষ!
375866_10152201261665497_1777979106_n
জোর কদমে চলে চূড়ার কাছাকাছি পৌঁছে অবশেষে মনে হল ধোঁয়ার দেখা পেলাম, কিন্তু হা হতোস্মি! এ তো মেঘ! ফিনফিনে ঢাকাই মসলিনের মত মেঘেরা পাক খেয়ে ঘুরছে যেন আগ্নেয়গিরির চারপাশে,অবশ্য পরের কয়েকদিনেও ভিসুভিয়াসের দেখা কোন সময়ই সম্পূর্ণ মেঘমুক্ত অবস্থায় মেলেনি, হতে পারে শরতে এমনটাই হয়, যে কারণে এত উপরে উঠেও ঝকঝকে নীল ভূমধ্যসাগরের দর্শন মিলল না মেঘদূতদের কারণেই।
কিন্তু ভিসুভিয়াসের কুখ্যাত জ্বালামুখ তখন আমাদের সামনে, কেবল একটি রেলিংয়ের ব্যবধান! এরপরেই ঢাল নেমে গেছে নানা ধরনের শিলাস্তর নিয়ে কেন্দ্র পর্যন্ত, অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম জ্বালামুখের কন্দরেও সবুজের ছোঁয়া, বিশেষ করে একেবারে কেন্দ্রবিন্দুতেই বেশ কিছু গাছ চির উন্নত মম শির হয়ে দাড়িয়ে আছে সগর্বে! অবশ্য অনেক মৃত আগ্নেয়গিরিরই জ্বালামুখে জল জমে সেটি নয়নাভিরাম হ্রদে পরিণত হয়, যাদের বলা হয় আগ্নেয় হ্রদ। কিন্তু এমন পর্যায়ের যেতে মনে হচ্ছে ভিসুভিয়াসের দেরী আছে।
389524_10152210617840497_1137920580_n
আমার ক্যামেরার এবং সারার সাহায্যে টুকটাক ফটোসেশন চলল, তার একটি তো আপনারা এই পোস্টে দেখেছেনই। ছবি তোলার সময়ই প্রথম বারের মত নিচের এক প্রান্তে ধোঁয়া চোখে আসল! সত্যিকারের আগ্নেয়গিরি ধোঁয়া! সেখানে ভূমির তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেডের বেশী! মাটি মনে হয় ফুটছে টগবগ করে, কতটা উত্তপ্ত হলে শিলা থেকে ধোঁয়া বেরোতে পারে!
559612_10152210617175497_1039888466_n
উৎক্ষিপ্ত লাভা নয়, আগুনের ফুলকি নয়, সোনারঙা নিভু নিভু পাথর নয়, সেই অল্প ধোঁয়ার উৎসেই যে কি রোমাঞ্চের সৃষ্টি করল মনে তা পুরোপুরিই অলেখ্য। শুধু মনে হল, এবার যদি বাবা ভিসুভিয়াস একবার ফুঁসে ওঠে আপন মর্জি মত ব্যস – অমরত্ব ঠেকায় কোন দেবতা!
156680_10152184635025497_1782208163_n
253090_10152180588015497_1857410216_n
গত দুই হাজার বছরে মোটমাট ৭৯ বার অগ্ন্যুৎপাত ঘটেছে ভিসুভিয়াসে, কিন্তু কোনটাই ৭৯ খ্রিস্টাব্দের মত বিশাল ছিল না, এবং বাকী কোনটাই ঐটার মত মানবসমাজের ক্ষতিসাধনও করে নি। ইউরোপের নানা দেশে তো বটেই এমনকি এখানের ধোঁয়া ১২০০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে ইউরোপ- এশিয়ার মিলনস্থলের ইস্তাম্বুলের আকাশ পর্যন্ত দখল করে নিয়েছে মাঝে মাঝে!
559589_10152188279445497_717380045_n
তবে ভূতাত্ত্বিকদের ( আমাদের দ্রোহীদার মত) গবেষণায় জানা গেছে আল্পস পর্বতমালার জন্ম যে কারণে হয়েছে, ভূপৃষ্ঠে ভিসুভিয়াসের উদ্ভবও সেই একই কারণে- আফ্রিকা মহাদেশীয় প্লেটের সাথে ইউরেশীয় মহাদেশের প্লেটের সংঘর্ষ। তাপ-চাপের কারণে উদ্ভূত চিত্র- বিচিত্র শিলার দেখা মিলল জ্বালামুখের চারপাশে ( এই নিয়ে যে কোন প্রশ্ন থাকলে মন্তব্যে পাঠান- উত্তরদাতা হিসেবে দ্রোহীদা বস্তুনিষ্ঠ উত্তর দিতে বদ্ধ পরিকর) ।
375953_10152180606205497_1914325445_n
528604_10152182928830497_62250473_n
425822_10152182929010497_1084334383_n
566_10152184635095497_843434438_n
যে এলাকায় সবচেয়ে বেশী ধোঁয়ার দেখা মিলল, মনে হল সুযোগ পেলেই চট করে বারবিকিউ সেরে ফেলতে পারব ১ মিনিটে, সেখানেই দেখি ক্ষুদের পাখির দল নির্ভয়ে নীড় পেতেছে, যদিও বংশ-কুল-জাত ঠাহর করবার আগেই তারা পুচ্ছ ঝাঁকিয়ে হারিয়ে গেল গহ্বরের নিচের দিকে।
581540_10152191149455497_412131547_n
আর পাওয়া যাচ্ছিল গন্ধকের কটু গন্ধ, একেবারে রসায়নল্যাবে পাওয়া পচা ডিমের গন্ধের জমজ ভাই। কেমন অদ্ভুত ধরনের এক বিশাল গহ্বর, মনে হল এর নিজস্ব কোন সত্তা আছে। ক্রুর, ভয়ংকর, নিষ্ঠুর সেই অন্ধ জ্বালামুখ বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর দানবের মতই যেন অপেক্ষা করছে অবশ্যম্ভাবী কোন পরিণতির!
253114_10152184635110497_2108083936_n
527358_10152210616290497_486282183_n
সেই ধোঁয়াশাময় নির্জনে পরিবেশে অবশ্য ভিনগ্রহ না হলেও জুল ভার্ণের কোন উপন্যাসে পৌঁছে গেছি তা নিয়ে সন্দেহ ছিল না বিন্দুমাত্রও।
536414_10152185910165497_904530879_n
253122_10152185910745497_203537700_n
জ্বালামুখের এক কিনারে নানা স্মারক চিহ্ন কেনার দোকান, সেখানে রোদ্রকরোজ্জল আগ্নেয়গিরিটির ভিউকার্ড যেমন ছিল, তেমনি ছিল নানা ধরনের , নানা বর্ণের পাথর! প্রবল তাপে ও চাপে কি করে এক মৌল অন্য মৌলতে রূপান্তরিত হয় তার যেন একটা প্রদর্শনী হয়ে গেল ছোট টেবিলেই!
577037_10152184634970497_2004991324_n
550130_10152214397110497_557282984_n
523600_10152214397005497_1026789222_n
182547_10152214396855497_836435174_n
এর পরপরই নিচে নামার রাস্তা, কিন্তু জানা গেল সেটি নেমে গেছে পর্বতের অন্য প্রান্তে, আমাদের যানের কাছে নহে! সেখানে যেতে হলে যেই রাস্তা দিয়ে এসেছি সেইখান দিয়েই ফিরতে হবে, একটু ঝুঁকি নিয়ে অবশ্য জ্বালামুখটির ভিতর দিয়ে গেলে শর্টকার্ট হতেও পারে, কিন্তু রেলিং টপকালেই হয়ত হা রে রে রে রে রে করে তেড়ে আসবে ইতালিয় প্রহরীর দল। এমনিতেই একবার একটু ভিতরে ঢুঁকে ধোঁয়ার ছবি তুলতে যেয়ে বিপদে পড়তে যাচ্ছিলাম, তাই মানে মানে চললাম নিচের পথে। এবারে গন্তব্য- এরক্যুলানো শহর।
483049_10152185909295497_1034883496_n

YOUR NAMEAbout Me
আসসালামু আলাইকুম। নবীন বাংলা ব্লগ সাইটে ভিজিট করার জন্য আপনাকে স্বাগতম। আসলে এই ব্লগ সাইটটি সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত। এবং আমি এই সাইটের এডমিন, মূলত ব্লগিং প্রাকটিস এবং মুক্ত জ্ঞাণ চর্চার জন্যই এই সাইটটি ওপেন করেছি। আমার সাইটের পোস্টগুলো অন্যান্য সুনাম খ্যাত ব্লগ সাইটে সমূহে পাবলিশ করে থাকি তথারুপ টেকটিউন্স, টিউনারপেইজ। ইনশাআল্লাহ যতদিন বেঁচে থাকব নবীন বাংলা ব্লগে লেখালেখি করার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। এখানে অন্যান্য লেখকদের বাছাই করা পোস্টগুলো পাবলিশ করা হয়। এবং ইচ্ছা করলে আপনিও এই ব্লগের অতিথি লেখক হিসাবে শুরু করতে পারেন।পরিশেষে আমার সাইট কিংবা প্রকাশিত লেখা সম্পর্কে কোন আপনাদের অভিযোগ, মতামত, পরামর্শ থাকলে তা সাদরে গ্রহন করা হবে। আবারো ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা সবাইকে!!
Follow : | | Facebook | Twitter

Post a Comment

 
Top