0
মুল লেখক-তারেক অনু,সচলায়তন ব্লগ

যখন ভাবি এই লেখাগুলোর মধ্যে আমি কতখানি নিজের দোষ স্বীকার করে উঠতে পেরেছি তখন আর আমার আফসোস থাকেনা। হাজার হোক আমি তো দেবতা নই। যারা আমাকে দেবতা জ্ঞান করতেন তারা যদি আজ আমাকে রক্ত-মাংসের মানুষ মনে জেনেও ভালবাসেন তবেই না জীবন সার্থক। উঁচু পিঁড়িতে বসে শ্রদ্ধা পাবার অভিলাষ আমার নেই। যেটুকু গানবাজনা করেছি, মানুষকে যেটুকু আনন্দ আজ অবধি দিয়েছি, তার বিনিময়ে যেটুকু শ্রদ্ধা-ভালবাসা মানুষ আমায় দিতে পারেন তা পেলেই নিজেকে ধন্য মনে করব। কারণ জানব, ওইটুকুই আমার সত্যিকারের পাওনা।

১৯৭৯ সালের ২১ মার্চ দার্জিলিং-এ নিজের আত্মজীবনীগ্রন্থ রাগ-অনুরাগের মুখবন্ধে উপরের কথাগুলো লিখেছিলেন বিশ্বখ্যাত সেতার বাদক পণ্ডিত রবি শঙ্কর। আবার এক অর্থে এতই আত্মজীবনী নয়ও, ১৯৭৭ সাল থেকে শুরু করে সওয়া দুই বছর রবিশঙ্করের সাথে আলোচনায় বসেছিলেন শঙ্করলাল ভট্টাচার্য, সেই আলাপগুলো ভরা মজলিসে উপস্থাপনের মত আড্ডার ভঙ্গীতে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। এসেছে বর্ণিল জীবনের নানা দিক।
ঘরের কোণে একলা বসে রবিশঙ্করের সৃষ্টিতে মজে আছি তুষার ঝরা শীতের রাতে, বাহিরে মনে হচ্ছে তার মহাপ্রয়াণে প্রকৃতিও তুষার, বায়ু, গাছের ছন্দে শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন বিশাল হৃদয়ের মানুষটিকে। ভাবলাম কমাস আগেই পড়া রাগ-অনুরাগ নিয়ে একটু আলোচনা করি সবার সাথে—
দেখুন মশাই আমি লেখক নই, গানবাজনার কারবার করি। আর তাতেই তো এখনও অনেক বাকি। লেখার কথা ছেড়ে দিন। তবে হ্যাঁ, অনেক দিন থেকে লোকে বলে এসেছে, একটা কিছু লিখুন। হয়ত ইচ্ছেও ছিল কন-না-কোনদিন লিখব। যদি পরে কোনদিন সময় করে বসতে পারি। কিন্তু করব করব করেও সেটা হয়ে ওঠে না। আর, তা ছাড়া কি লিখতে গিয়ে কি লিখে বসি এই ভাবনাও আসত। বলা তো যায় না। টাই আবার মাঝে মাঝে ভাবতাম লেখার কি দরকার! আমার একটা মত ছিল, যন্ত্র ছেড়ে কথা কেন? এমন কি, একসময় মনে মনে যে বইটার মহড়া দিতাম তার নামটাও ঐ রেখেছিলাম।
এইভাবেই শুরু হয়েছে অসাধারণ বইটির, আগুপিছু করে রবি শঙ্কর স্মরণ করেছেন তার শৈশব, সঙ্গীত সাধনা, বন্ধু, গুরু, বাজনা, ভ্রমণ, প্রেমিকা সবই- ঠিক তার সেতার বাদনের মত, মিহি সুর থেকে উত্তাল তরঙ্গে দুই মলাটে এটে গেছে সমগ্র জীবন। বইটি তিনি উৎসর্গ করেছেন বাবা কে, তার সেই বাবার নাম ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ- যিনি তার জীবনের আদর্শ, সমস্ত শক্তির উৎস। ১৯৩৪ সালে তার সাথে বালক রবি শঙ্করের প্রথম দেখা হয়, পরে বিলেতযাত্রার সময় জাহাজঘাটায় বিদায় দিতে এসে রবির মা হেমাঙ্গিনী ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁকে বলেছিলেন- দেখবেন এই ছেলেটাকে আমার। ওর বাবা ( পণ্ডিত শ্যামশঙ্কর চৌধুরী) কিছুদিন হল মারা গেছে। আজ থেকে আপনিই ওর বাবা। ভুলত্রুটি হলে ক্ষমা করে দেবেন। আপনার হাতেই ওকে ছেড়ে দিলাম।
আবেগী মানুষ ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ কাঁদতে কাঁদতে বলেছিলেন আপনার ছেলে আজ থেকে আমার ছেলে। আমার এক ছেলে তো আছেই, আজ থেকে আমার আর এক ছেলে হল। ও আমার বড় ছেলে হবে এবার।
মহান সঙ্গীতজ্ঞ ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ জীবনের নানা দিক উঠে আসে রবির বর্ণনায়, বাংলাদেশের মানুষ তিনি, কোলকাতার ভাষায় কথা বলতেন না, আজীবন নিজের বুলিই বলেছেন সারা বিশ্বে, তার সাধনা, তার হিমালয়সম জ্ঞান, মানবিকতা নিয়ে বলে গেছেন পাতার পর পাতা।
এসেছে তার সঙ্গীত জীবনের সবসময়ের সঙ্গী ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর পুত্র ওস্তাদ আলী আকবর খাঁর কথা, যার সঙ্গীতচর্চায় অলসতায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ এক সময় গাছের সাথে বেঁধে সারা দিন পিটিয়েছিলেন, সেই মানুষটিই পরিচিতি পেলেন বিশ্বে অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাজিয়ে হিসেবে। উনাকে সবসময়ই রবি শঙ্কর ভাই আলী আকবর বলে সম্বোধন করেছেন।
মুচকি হাসি নিয়ে স্মরণ করেছেন জীবনের শুরুর দিকের দিনগুলোর কথা যখন মানুষের ধারণা ছিল মসুলমান শিল্পী না হলে কিংবা নামের পিছনে খাঁ না থাকলে, পেয়াজ-রসুনের গন্ধ না আসলে নাকি শিল্পী হওয়া যাবে না! রাগে দুঃখে রবি শঙ্কর ভেবেছিলেন নাম পরিবর্তন করে রব্বন খাঁ করে ফেলবেন।
আরও একজনের কথা বার বার এসেছে রবি জীবনকথায়, তার আপন বড় ভাই বিশ্বখ্যাত নৃত্যশিল্পী উদয়শঙ্কর, যার সমান খ্যাতি আজ পর্যন্ত উপমহাদেশের কোন নৃত্যশিল্পীর কপালে জোটে নি।
এসেছে বিলায়েত খাঁর সাথে তার বন্ধুত্ব এবং বাজনা নিয়ে অদ্ভুত দন্ধের কথা, যদিও বোঝা যায় রবি সেরা না বিলায়েত সেরা এমন কথা তুলে তাদের বাজনার লড়াইটা উসকে দিতে খবরের কাগজের লোকেরা। সেই সাথে সত্যজিৎ রায়ের ছবিতে, তপন সিংহের চলচ্চিত্রে সুরারোপণের অভিজ্ঞতা বলেছেন চটুল ভঙ্গীতে।
বইটির আরেক বিশাল সম্পদ এর আলোকচিত্রের সংগ্রহ, কত বিখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ আর মনিষীর ছবি আর কাহিনীযে স্থান পেয়েছে অতি অল্পের মাঝেও বিশেষ করে ওস্তাদ আলী আকবর খান, ওয়াজির খাঁ, আমির খাঁ, নিশার হুসেন খাঁ, ভীমসেন যোশী, আশিস খাঁ, গুলাম আলী খাঁ, আবদুল করিম খাঁ, ওংকারনাথ ঠাকুর, কেশরবাঈ, হীরাবাঈ, মল্লিকার্জুন মনসুর, আখতারীবাঈ, আহমেদজান থিরকুয়া সাহেব, কিষেণ মহারাজ, কেরামত খাঁ, দেবব্রত বিশ্বাস, শম্ভু মিত্র, ঋত্বিক ঘটক, উৎপল দত্ত, সলীল চৌধুরী, ফরাসী দার্শনিক রোম্যা রলা, ইহুদি মেনুহিন, পাবলো কাসাল, লতা মুঙ্গেসকর, শচীন দেব বর্মণ, কানন দেবী, আমজাদ আলী খাঁ, ওস্তাদ আল্লারাখা প্রমুখের কথা।
সেই সাথে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সৃষ্টি নিয়ে তার একান্ত উপলব্ধি।
একাধিকবার কথা প্রসঙ্গে এসেছে পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু এবং ইন্দিরা গান্ধীর কথা, নেহেরু যে তাকে বিশেষ স্নেহের চোখে দেখতেন সে কথা রবি বলেছেন নানা ঘটনার স্মৃতিচারণ করতে করতে। সেই সাথে অবশ্যই জর্জ হ্যারিসন এবং বিটলস! জর্জ হ্যারিসন যখন রবিশঙ্করকে গুরু হিসেবে মেনে নিলেন তখন বিশ্বব্যপী কোটি কোটি তরুণের কাছে তুমুল জনপ্রিয় হয়ে উঠলেন রবি, কিন্তু এর ঋণাত্নক দিকও ছিল, অনেকেরই ধারণা হয়েছিল হিপি আর ড্রাগ কালচারে জড়িয়ে যেয়ে রবি শঙ্কর তার সৃষ্টির বারোটা বাজাচ্ছেন।
নিজের জীবনসঙ্গিনী এবং প্রেমিকাদের কথা বলেছেন অকপটে, ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর কন্যা অন্নপূর্ণার সাথে যখন তার বিয়ে হয় তখন বরের বয়স সবে ২১ আর কনের বয়স পনের পেরিয়েছে। উদারপন্থী আলাউদ্দিন খাঁর জেদে হিন্দু মতেই বিয়েটি সম্পন্ন হয়। এর কিছুদিন পরেই তাদের প্রথম সন্তান শুভর জন্ম হয়। এরপর নানা কারণে, রেওয়াজ, বাড়তি উপার্জন, সংসার এবং কমলার সাথে সম্পর্কের কারণে অন্নপূর্ণার সাথে রবির সম্পর্ক ভেঙ্গে যায়, যদিও তারা আইনের কাছে বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন করেন নি। কমলাকে বিয়ে না করার ব্যাপারে রবি শঙ্কর স্পষ্ট বলেছেন- কমলাকে যে নিয়ম মেনে বিয়ে থা করিনি তার কতকগুলো কারণ আছে, কি জানি, নিজের বিয়ে দেখে এবং অন্য অনেকের বিয়ে দেখে আমার বিয়ের ওপর থেকে সমস্ত শ্রদ্ধা চলে গেছে। তবে ভালো স্ত্রীরা বা সঙ্গিনীরা যে কোনও পুরুষকে জীবনে অনেক বড় হতে এবং সার্থক হতে অনুপ্রেরণা দেয় এবং সাহায্য করে, সেটাও আমি খুব বিশ্বাস করি। কোনও সন্দেহই নেই সে বিষয়ে। তবে সেটা নিছক বিয়ের জন্য কি না, সেটা তর্কসাপেক্ষ। ঐ সার্থক সম্পর্কও তো আসলে একটা গভীর অন্তরঙ্গতা এবং ভালবাসার ওপরই প্রতিষ্ঠিত। সেখানে মন্ত্র পড়ে কার বিয়ে হল, কার কি হল, সেটা বড় কথা নয়, বিয়ে না হয়েও সেটা হতে পারে। কাজেই বিয়ে বলে যে মন্ত্র পড়াপড়ির একটা অজুহাত, সেটা না দেখালেই কি নয়? আসল কথা ভালবাসা, বোঝাবুঝি, মানিয়ে চলা এবং একে অন্যকে বড় হতে দেওয়ার শুভ প্রচেষ্টা। পরস্পরকে সন্মান দিয়ে, ভালবেসে যারা থাকতে পারে তারাই সুখী, তারাই আদত বিবাহিত। এবং সেটা কমলার সঙ্গে আমার হয়েছে। তাই আমি ওকে পেয়ে সুখী।
অথচ এই কমলার প্রতিও আমি বিশ্বাসভঙ্গের কাজ করেছি। আনফেথফুল হওয়া বলতে যা বোঝায়। বহুবার। কিন্তু আনফেইথফুল হওয়ার মাঝেও একটা কথা আছে। আইফেইথফুল আমি নিশ্চয়ই হ্যেছি,কিন্তু আমি তার জন্য ওর কাছে মিথ্যার আশ্রয় নিই নি।
[b]
আমাদের জীবন যা হয়, অর্থাৎ অনেক দিন একলা একলা অনেক অনেক ঘুরতে থাকলে কিছু-না-কিছু এক্সপিরিয়েন্স আপনা থেকেই হয়ে পড়ে। এবং সেটা যারা অস্বীকার করেন তাদের আমি বড় মানুষ হিসেবে মানতে বাধ্য। কিন্তু যারা এসব ঘটিয়েও সব অস্বীকার করেন তাদেরকে আমি নিম্নস্তরের মনোবৃত্তির লোক বলেই ধরব। [/b]
এর পর রবি তার এক নাম না জানা প্রিয় বান্ধবীর কথা বলেন যে তার পঞ্চম সে গারা হতে চেয়েছিল, ঐ যে রবি গারার মুখটা বাজান, তারপর কোথায় কোথায় চলে যান, কত অন্য রাগ ধুনে তানে গিয়ে মিশে যেয়ে আবার কিরকম ভাবে মাঝে মাঝে ফিরে আসেন সেই পঞ্চম সে গারায়! সেই রমণীই কি রবি শঙ্করের নিউ ইয়র্কে প্রেমিকা স্যু জোনস, যার কথা রবি বলেছেন গলায় বিশেষ টান নিয়ে ( রবি শঙ্কর এবং স্যু জোনসের কন্য নোরা জোনস বিশ্বখ্যাত গায়িকা)।
এত জগত জোড়া খ্যাতির মাঝে বাঙালি মানুষটি অন্য রকমের ডাক শুনতে পান হৃদয়ের মাঝে, নিজের ভাষাতেই বলেন- করছি কি আমি! আর কতদিন এসব! কি-ই বা দিলাম, কি-ই বা পেলাম! একেবারে বিরক্ত বিস্বাদ! কিছুই ভাল লাগে না! সেই গতানুগতিক প্লেনে চড়ে আজ এখানে, কাল ওখানে। হোটেলে থাকা একঘেয়ে খাওয়া, punctually হলে যাওয়া, বাজনা বাজানো, তারপর হোটেলে ফিরে আসা নিশাচরের মতন মাঝরাত্রে। ভাল লাগে না আর!
অবসাদ থেকে খানিকটা মুক্তি পেতে, জীবনে ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তি অর্জনের জন্যই হত রবি শঙ্কর হাত পাতেন স্বামী বিবেকানন্দের বাণীর কাছে, টাট বাবার শিষ্য হন এবং সত্য সাইবাবারও!
রাগ-অনুরাগ এখানেই শেষ, কিন্তু সেটি প্রায় ৪০ বছর আগের ঘটনা। এর মাঝে অনেক কিছু ঘটেছে, রবি শঙ্কর আমাদের দিয়েছেন নব নব সৃষ্টি। ব্রিটিশরাজ তাকে বিশেষ ধরনের নাইটহূড উপাধি দিয়েছিল, যার ফলে তিনি নামের আগে স্যার ব্যবহার করতে পারবেন না ( আগের যুগে রাজার ঘোড়ার লাদি পরিষ্কার করেও অনেকে স্যার উপাধি পেয়েছে, একজন রবিশঙ্করের স্যার উপাধি লাগে না হে মূর্খ ব্রিটিশরাজ), নোবেল শান্তি পুরষ্কারের জন্যও মনোনীত হয়েছিলেন। আজ তিনি নেই, কিন্তু তার সৃষ্টি আছে, থাকবে যতদিন বিশ্বে মানুষের সুকুমারবৃত্তিগুলো টিকে থাকবে ততদিন। বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধুটি যে নিউইয়র্কে কনসার্ট ফর বাংলাদেশে আয়োজনে কি বিশাল ভূমিকা রেখেছিলেন তা আমাদের সকলেরই জানা।
হে সুরের প্রকৃত সাধক বাঙ্গালী রবি শঙ্কর ( রবীন্দ্র শঙ্কর চৌধুরী), আপনার দিকে চেয়ে আমাদের বিস্ময়ের শেষ নাই। আপনি অমর আমাদের হৃদয়ে।

YOUR NAMEAbout Me
আসসালামু আলাইকুম। নবীন বাংলা ব্লগ সাইটে ভিজিট করার জন্য আপনাকে স্বাগতম। আসলে এই ব্লগ সাইটটি সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত। এবং আমি এই সাইটের এডমিন, মূলত ব্লগিং প্রাকটিস এবং মুক্ত জ্ঞাণ চর্চার জন্যই এই সাইটটি ওপেন করেছি। আমার সাইটের পোস্টগুলো অন্যান্য সুনাম খ্যাত ব্লগ সাইটে সমূহে পাবলিশ করে থাকি তথারুপ টেকটিউন্স, টিউনারপেইজ। ইনশাআল্লাহ যতদিন বেঁচে থাকব নবীন বাংলা ব্লগে লেখালেখি করার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। এখানে অন্যান্য লেখকদের বাছাই করা পোস্টগুলো পাবলিশ করা হয়। এবং ইচ্ছা করলে আপনিও এই ব্লগের অতিথি লেখক হিসাবে শুরু করতে পারেন।পরিশেষে আমার সাইট কিংবা প্রকাশিত লেখা সম্পর্কে কোন আপনাদের অভিযোগ, মতামত, পরামর্শ থাকলে তা সাদরে গ্রহন করা হবে। আবারো ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা সবাইকে!!
Follow : | | Facebook | Twitter

Post a Comment

 
Top